Skip to main content

গ্রাম স্টেইন করার পদ্ধতি।

গ্রাম স্টেইনঃ (Gram staining, Gram's method) ব্যাক্টেরিয়া সনাক্তকরণের জন্য বহুল ব্যবহৃত উপকরণ। ব্যাক্টেরিয়া সনাক্তকরণের জন্য এটিই মোটামুটি সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও সফল পদ্ধতি। ১৮৮৪ সালে ডেনিশ বিজ্ঞানী হ্যান্স ক্রিস্টিয়ান গ্রাম এ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এরপর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এই পদ্ধতি অত্যন্ত সার্থকভাবে প্রয়োগ হয়ে আসছে।

ইতিহাস ও নামকরণঃ

এই পদ্ধতিটির নামকরণ করা হয়েছে আবিষ্কারক ক্রিস্টিয়ান গ্রাম (Hans Christian Gram) (১৮৫৩-১৯৩৮) এর নামে যিনি এ পদ্ধতি প্রথম প্রয়োগ করেন তার সহযোগী কার্ল ফ্রেডলেনডার (Carl Friedländer) এর সাথে বার্লিন শহরের একটি হাসপাতালের মর্গে কাজ করার সময়। তবে গ্রাম এ পদ্ধতি ব্যাক্টেরিয়াকে পৃথকীকরণের জন্য নয়, মূলত ফুসফুস কলাতে ব্যাক্টেরিয়াকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্যই প্রয়োগ করেছিলেন। তাঁর আবিষ্কৃত পদ্ধতিটি তিনি প্রকাশ করেন ১৮৮৪ সালে।
গ্রাম স্টেইন পদ্ধতিতে ব্যাক্টেরিয়াকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে ঃ
১। গ্রাম পজিটিভ ব্যাক্টেরিয়া এবং 
২। গ্রাম নেগেটিভ ব্যাক্টেরিয়া
এ পদ্ধতিতে প্রথমে প্রস্তুতকৃত ব্যাক্টেরিয়া স্মিয়ারকে ক্রিস্টাল ভায়োলেট রঞ্জক দ্বারা রঞ্জিত করা হয়। এরপর আয়োডিন দ্রবণ দ্বারা রঞ্জনটিকে স্থায়ী করে তাতে ইথাইল অ্যালকোহল অথবা অ্যাসিটোন দ্রবণ যোগ করা হয়। ইথাইল অ্যালকোহল বা অ্যাসিটোন নিরঞ্জক হিসাবে কাজ করে। এরপর স্মিয়ারটিতে যোগ করা হয় স্যাফ্রানিন যা কাউন্টার স্টেইনইং এজেন্ট হিসাবে কাজ করে। সর্বশেষে স্মিয়ারটিকে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে পরীক্ষা করা হয়। যদি স্মিয়ারটি তার আদিবর্ণ অর্থাৎ বেগুনী বর্ণকে ধারন করে রাখে তাহলে স্মিয়ারটিতে রয়েছে গ্রাম পজিটিভ ব্যাক্টেরিয়া। আর যদি স্মিয়ারটি তার আদি বর্ণ হারিয়ে স্যাফ্রানিনের লাল বর্ণ ধারণ করে তাহলে স্মিয়ারটিতে রয়েছে গ্রাম নেগেটিভ ব্যাক্টেরিয়া।


গ্রাম স্টেইন করার পদ্ধতিঃ

উপাদানঃ

  1. প্রাথমিক স্টেইন (Primary stain): ক্রিস্টাল ভায়োলেট।
  2. মর্ডান্ট(Mordant): গ্রাম-এর আয়োডিন সল্যুশন।
  3. ডিকালারাইজার (Decolorizer): ইথাইল অ্যালকোহল ও অ্যাসিটোন মিশ্রণ।
  4. কাউন্টার স্টেইন(Counter stain): স্যাফ্রানিন।
  5. গ্লাস স্লাইড, মার্কার পেনসিল, বুনসেন বার্নার,ইনোকুলেটিং লুপ, স্টেইনিং ট্রে ইত্যাদি।

কার্যপ্রণালীঃ

১। প্রথমত ব্যবহার্য সকল সরাঞ্জম ভালমতো জীবাণুমুক্ত (Sterilize) করে নিতে হবে। 
২। এরপর ট্রান্সফার লুপ ব্যবহার করে নিরাপদে নমুনা সংগ্রহ করতে হবে এবং স্লাইড এ স্থাপন করে স্মিয়ার তৈরি করতে হবে এবং লুপটিকে পুনরায় বুনসেন বার্নারের শিখায় জ্বালিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। 
৩। স্লাইডটিতে ক্রিস্টাল ভায়োলেট যোগ করে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। 
৪। এখন স্লাইডটি পানি দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে নিয়ে তাতে গ্রামস্ আয়োডিন বা লুগলস্ আয়োডিন সল্যুশন যোগ করতে হবে যাতে রঞ্জনটি স্থায়ী হয়। 
৫। কিছুক্ষণ পর স্লাইডটি ধুয়ে নিয়ে তাতে যোগ করতে হবে ইথাইল অ্যালকোহল বা অ্যাসিটোন, যা নিরঞ্জক হিসাবে কাজ করে। 
৬। এরপর সবশেষে স্লাইডটি ধুয়ে নিয়ে তাতে যোগ করতে হবে স্যাফ্রানিন এবং অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে স্মিয়ারটিকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

Figure : Gram Staining Procedure. 

Comments

Post a Comment