Skip to main content

সিম্পল স্টেইন করার পদ্ধতি

সিম্পল স্টেইনঃ সিম্পল স্টেইন ব্যবহার করা হয়ে থাকে খুব তাড়াতাড়ি এবং সহজ উপায়ে ব্যাকটেরিয়ার আকার, আকৃতি ও উপস্থিতি দেখার জন্য। নামের সাথে সত্যিই মিল রয়েছে, সিম্পল স্টেইন আসলে খুব সিম্পল একটা স্টেইনিং পদ্ধতি যা মাত্র একটি স্টেইন সল্যুশান দিয়ে করা যায়। যে কোন একটি বেসিক ডাই/রং যেমন মিথাইলিন ব্লু, সাফ্রানিন, ক্রিস্টাল ভায়োলেট ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়া কে রং করা যায়।

এই স্টেইনের  সময় একটা হাইড্রোক্সাইড আয়ণ ছেড়ে দিবে অথবা একটি হাইড্রোজেন আয়ণ গ্রহন করবে এবং তখনই স্টেইনটি পজিটিভলি চার্জ হবে। আমরা জানি যে অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়ার কোষের উপরিভাগ এবং সাইটোপ্লাজম নেগেটিভ চার্জের হয়ে থাকে, তাই পজিটিভ চার্জের স্টেইন দ্রূত ব্যাকটেরিয়ার কোষের উপরিভাগের সাথে মিশে যায়। স্টেইনিংয়ের পর পরই ব্যাকটেরিয়ার কোষের গঠন প্রকাশ পায়।



Simple Staining Procedure
সিম্পল স্টেইন করার পদ্ধতি 

স্মিয়ার তৈরিকরণ এবং হিট ফিক্সিং করার পদ্ধতিঃ
১। প্রথমে একটি জীবানুমুক্ত ইনোকুলেটিং লুপের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া যুক্ত সাসপেনশান থেকে লুপফুল লিকুইড নিয়ে পরিষ্কার স্লাইডে নিতে হবে অথবা কালচার প্লেট থেকে আইসোলেটেড কলোনি এবং এক ফোটা পানি গ্লাস স্লাইডে নিতে হবে। 
২। ইনোকুলেটিং লুপের মাধ্যমে লিকুইড সাসপেনশানটি সমান এবং পাতলা করে ছড়িয়ে দিয়ে  স্মিয়ার বানাতে হবে।
৩। এখন স্মিয়ার তৈরিকৃত স্লাইডটি বাতাসে শুকাতে হবে।
৪। এবার আগুনের তাপ দিয়ে শুকাতে হবে এবং কাজটি খুব সতর্কতার সাথে করতে হবে, শুধু স্লাইডটি দুই-তিন বার বার্নারের উপর দিয়ে অতিক্রম করাতে হবে। ইহা ব্যাকটেরিয়ার কোষ গুলোকে স্লাইডের সাথে ফিক্স করবে, বেশী তাপে শুকানো যাবেনা এতে ব্যাকটেরিয়া কোষ মারা যাবে।

স্টেইনিং করার পদ্ধতি ঃ

১। মিথাইলিন ব্লু সল্যুশান দিয়ে পুরো স্লাইডের স্মিয়ারটিকে ঢেকে দিয়ে প্রায় এক মিনিট রাখতে হবে। স্টেইনিংয়ের সময় টা জটিল কিছু নয় তবে ৩০ সেকেন্ড থেকে ২ মিনিট রেখে স্টেইন করলে আশানুরুপ ফলাফল পাওয়া যায়। যত সময় বেশী স্টেইন রাখা হবে তত বেশী রং গাড়ো হবে।
৩। ডিস্টিল্ড ওয়াটার দিয়ে এবার অতিরিক্ত মিথাইলিন ব্লু ধুয়ে নিতে হবে।
৪। এবার স্লাইডটিতে আয়োডিন দ্রবণ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে,  আয়োডিন স্টেইনটিকে সেট করে রাখে।
৫। সতর্কতার সহিত অতিরিক্ত আয়োডিন পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
৬। বিবুলাস কাগজ অথবা টিস্যু পেপার দিয়ে স্লাইডের পেছনের পাশে এবং স্টেইনকৃত পাশে মুছতে হবে।
৭। মাইক্রোস্কোপের নিচে স্মিয়ারটিকে ১০এক্স এর মাধ্যমে ফোকাস ঠিক করে নিতে হবে।
৮। ইমারশন ওয়েল ব্যবহার করে ১০০ এক্স অবজেক্টিভ এর মাধ্যমে স্লাইডে জীবানু পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

ফলাফলঃ
ব্যাকটেরিয়ার কোষ গুলো সাধারনত রং নেয় এক সমানভাবে এবং রং টা নির্ভর করে ব্যবহৃত স্টেইনের উপর। যদি মিথাইলিন ব্লু স্টেইন ব্যবহার করা হয় তাহলে কিছু দানাদার বস্তু লক্ষ্য করা যায় ব্যাকটেরিয়ার কোষের মধ্যে অথবা ব্যাকটেরিয়ার কোষের চেয়ে বেশী রং নিয়ে নেয় দানাদার বস্তু গুলো যেটা হয়ে থাকে বিভিন্ন রকম কেমিক্যাল এর কারনে।


Left: Cocci in Cluster  Right: Bacilli


চিত্রঃ বামে কক্কাই গুলো গুচ্ছ আকারে আছে এবং ডানে বেছিলাস। 
ব্যবহারঃ
 ডায়াগনোস্টিক মাইক্রোবায়োলজী ল্যাবরেটরী গুলোতে সাধারনত সিম্পল স্টেইন করা হয় না এর পরিবর্তে গ্রাম বা এএফবি স্টেইন করে ব্যাকটেরিয়া চিহ্নিতকরন এবং পৃথকিকরন করা হয়ে থাকে।
সিম্পল স্টেইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ নিচের কারণগুলোর জন্যঃ
১। এটি ব্যাকটেরিয়াকে ইস্ট কোষ থেকে পৃথক করে দেখায়। যেমন যখন আমরা এন্ডোসার্ভিক্যাল সোয়াব বা হাই ভ্যাজাইনাল সোয়াব ব্লাড আগার মিডিয়াতে কালচার করি তখন স্টেফাইলোকক্কাস স্পেসিস এবং ইস্ট সেল একই ধরনের কলোনি প্রকাশ করে ( এটি সচরাচর ভুল হয়ে থাকে নতুন টেকনোলজিষ্ট অথবা কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অনুজীব-বিজ্ঞানীদের(Microbiologist with less experiences)। তবে ওয়েট মাউন্ট টেকনিক বা সিম্পল স্টেইন ব্যবহার করে সহজেই চিহ্নিত করা যায়।
২। বেছিলাস স্পেসিস কোন কারনে প্লেটে কন্টামিন্যান্টের মত দেখা যায়। কিছু ক্ষেত্রে এরা ব্লাড আগারে জন্মায় কিন্তু ম্যাকনকি আগারে জন্মায় না তাই  এদের আকার আকৃতি দেখে চিহ্নিত করার জন্য সিম্পল স্টেইন করা হয়ে থাকে।

Comments

Popular posts from this blog

গ্রাম স্টেইন করার পদ্ধতি।

গ্রাম স্টেইনঃ  ( Gram staining, Gram's method) ব্যাক্টেরিয়া  সনাক্তকরণের জন্য বহুল ব্যবহৃত উপকরণ। ব্যাক্টেরিয়া সনাক্তকরণের জন্য এটিই মোটামুটি সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও সফল পদ্ধতি। ১৮৮৪ সালে ডেনিশ বিজ্ঞানী  হ্যান্স ক্রিস্টিয়ান গ্রাম  এ পদ্ধতি  আবিষ্কার  করেন। এরপর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এই পদ্ধতি অত্যন্ত সার্থকভাবে প্রয়োগ হয়ে আসছে। ইতিহাস ও নামকরণঃ এই পদ্ধতিটির নামকরণ করা হয়েছে আবিষ্কারক ক্রিস্টিয়ান গ্রাম ( Hans Christian Gram ) (১৮৫৩-১৯৩৮) এর নামে যিনি এ পদ্ধতি প্রথম প্রয়োগ করেন তার সহযোগী কার্ল ফ্রেডলেনডার ( Carl Friedländer ) এর সাথে বার্লিন শহরের একটি  হাসপাতালের  মর্গে কাজ করার সময়। তবে গ্রাম এ পদ্ধতি ব্যাক্টেরিয়াকে পৃথকীকরণের জন্য নয়, মূলত ফুসফুস কলাতে ব্যাক্টেরিয়াকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্যই প্রয়োগ করেছিলেন। তাঁর আবিষ্কৃত পদ্ধতিটি তিনি প্রকাশ করেন ১৮৮৪ সালে। গ্রাম স্টেইন পদ্ধতিতে ব্যাক্টেরিয়াকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে ঃ ১। গ্রাম পজিটিভ ব্যাক্টেরিয়া এবং  ২। গ্রাম  নেগেটিভ ব্যাক্টেরিয়া । এ পদ...